কন্টেন্ট রাইটিং একটি মজার পেশা। যারা এটি করেন তাদের কাছে এটা এক ধরনের নেশাও বলা যায়। কিন্তু নতুন কন্টেন্ট রাইটার রা অনেক সমস্যায় পড়েন। অনেকেই রয়েছেন যারা নতুন রাইটিং এ এসে পড়ে ছেড়ে দেয়। তবে নতুনদের বলবো একটু ধৈর্য্য নিয়ে থাকলে আপনি ভালো করবেন। যাই হোক আমাদের এই কমিউনিটিতে রাইটিং নিয়ে গাইডলাইন দিবো বলেছি। তা আজ থেকেই শুরু হচ্ছে।
কি নিয়ে লিখবো ভাবতে ভাবতে ভাবলাম আজ নতুনদের গাইডলাইন নিয়ে কিছু লিখি। তো নতুন কন্টেন্ট রাইটিং এ এসে একজন নিউবি যে ভুল করে তা নিয়েই আজ এই লেখা। আমরা ১০টি ভুল বের করেছি যা নতুনরা সচারচর করে থাকে। আপনি যদি এই লাইনে নতুন হন তাহলে এই লেখা আপনার জন্য অনেক ইন্টারেস্টিং হতে যাচ্ছে। আপনি যদি উক্ত ভুলগুলোর একটিও করে থাকেন তাহলে আজ থেকেই তা ত্যাগ করুন। তো চলুন শুরু করা যাক ১০টি নতুন ভুল যা নতুনরা করে থাকে:
১. কপি
আমি অনেক নতুনদের দেখেছি কপি করে দিতে। অনেকদিন আগে আমার একটা কাজের জন্য লোক নিচ্ছিলাম তখন অনেকেই দেখেছি কপি লেখা দিয়ে বলেছে ভাই এটা আমার স্যাম্পল। যারা কপি করেন তাদের বলছি, ভাই দুনিয়াটা অনেক স্মার্ট। আপনি কপি করবেন আর কেউ আপনাকে ধরতে পারবে না ভাবলে খুব বড় ভুল করছেন। আর কন্টেন্ট রাইটিং একটা সৃজনশীল কাজ, আর কপি করাতে সৃজনশীলতা নেই। তাই এই লাইনে টিকে থেকে একটা ভালো পজিশনে যেতে চাইলে আজ থেকে কপি করা পরিহার করুন।
২. গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে
আপনি যদি স্কুল কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে পড়ে এসাইনমেন্ট করে ভাবেন এইটা আর ওয়েব রাইটিং করা এক তাহলে বেরিয়ে আসুন এই চিন্তা থেকে। কেননা ওয়েব রাইটিং আর কলেজ-ইউনিভার্সিটির রাইটিং দুটোই ভিন্ন। একসাথে মিলাবেন তো বিপদ। কেন বিপদ জানেন? কারণ, আপনি এসাইনমেন্টে যেভাবে হোক লিখে দিচ্ছেন ভুল হলেও মাফ হবে আর মানিয়ে নেয়া যায়। কিন্তু ওয়েব রাইটিংয়ে জানতে হবে অনেক কিছু। প্রতারনা কয়টা হবে, কি-ওয়ার্ড প্লেসমেন্ট ঠিক হচ্ছে কিনা, রিডেবিলিটি ঠিক আছে কিনা, মেটা ডেসক্রিপশন উপযুক্ত কিনা, আপনার আর্টিকেল কনভারসেশন টাইপ হচ্ছে কিনা, এছাড়া অন পেইজ এস.ই.ও করেছেন কিনা এইগুলো। তাই গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
৩. ইরিলিভেন্ট কথা লিখা
আপনি যা লিখছেন চেষ্টা করবেন সেখানে যতটুকু না দিলে নয়। কিন্তু আপনি যদি যতটুকু দরকার তার চেয়ে অতিরিক্ত দেন তখন কি হবে জানেন? আপনার আর্টিকেল আর পড়ার মতো মজা লাগবে না। আর ক্লায়েন্ট দেখলেও বিরক্ত হবে। তাই চেষ্টা করবেন অপ্রাসঙ্গিক বিষয় এড়িয়ে যাবার।
৪. বড় বাক্য এড়িয়ে চলুন
অনেক আর্টিকেলে দেখা যায় যে বাক্য বিশাল বড় করে ফেলা হয়। অনেক সময় তা ৩-৪ লাইন পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু এত বড় বাক্য কিন্তু অপ্রয়োজনীয়। কেননা আপনি মনে করছেন এটা পারফেক্ট কিন্তু আদৌ তা পারফেক্ট না। কেননা আপনি ইংলিশ পারেন তা আপনি লিখা দিয়ে জানান দিচ্ছেন কিন্তু আপনি জ্ঞানী স্মার্ট না। এত বিশাল লাইন অনেকে পড়তে চাইবে না। যা আপনার অসাধারণ আর্টিকেল নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
৫. WORK SMART NOT WORK HARD
স্মার্ট হতে শিখুন। আপনি গাধার মতো খাটার নিয়ত করলে বাদ দিন। কেননা গাধার মতো খাটলে আপনি সফল হতে পারবেন না। আপনি আপনার মতো করে একটা সুইটেবল টাইম ফিক্সড করুন সেই টাইমে লিখুন। আমি যেমন রাত জেগে কাজ করতে পছন্দ করি অনেকেই ভোরে উঠে কাজ করতে বেশি পছন্দ করে। তাই নিজের পছন্দের সময় কাজ করুন যা আপনাকে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ দিবে।
৬. ডেডলাইন মিস
এটা অনেক নতুনরা করে থাকে। রাইটিং ঠিক হচ্ছে কিনা, কাটাছেঁড়া করা এবং আরো রাইটিং একসাথে করতে গিয়ে সঠিক সময়ে কাজ জমা না দেয়া যার ফলে ডেডলাইন মিস হয়। দেখুন নতুন অবস্থায় এই কাজ মোটেও করা যাবেনা। আপনি এজেন্সিতে কাজ করুন কিংবা কোনো বড় ভাই এর আন্ডারে কিংবা ক্লায়েন্টের। আপনি যদি ডেডলাইন মিস করেন তাহলে কিন্তু নেগেটিভ একটা ইমপেক্ট তৈরি হয়ে যায়। প্রয়োজনে একদিন সময় বাড়িয়ে নিন কিন্তু ডেডলাইন মিস করবেন না।
৭. রাইটিং টোন ডেভলপ না করা
আপনি যদি রাইটিং টোন ডেভলপ না করে যে ধারায় আছেন তাতেই পড়ে থাকেন হবে না কিন্তু। কেননা একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার আজ থেকে ৫ বছর আগে যা ডিজাইন করতো এখন কিন্তু তার চেয়ে আরো কোয়ালিটিফুল ডিজাইন করে। কারণ সময়ের সাথে সাথে নিজেকেও তো ইম্প্রুভ করতে হবে। আর রাইটিংটাও সেরকম। আপনি যদি লিখতে চান তো পড়তে হবে। প্রতিদিন লেখার পাশাপাশি প্রচুর পড়তে হবে। পড়লেই নতুন আইডিয়া আসবে।
৮. ওয়ার্ড ড্রাগিং
খাটি বাংলায় যদি বলি ত্যানা প্যাচানো। অনেক বাংলা নিউজে দেখবেন এক কথা বারবার লিখেছে তখন আপনি কি বিরক্ত হন না? অবশ্যই হন। তাহলে যদি এখানে এই সেইম কাজ করেন তাহলে আপনার ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হবে? অবশ্যই না। তাই এই ত্যানা প্যাঁচানো কিংবা এক কথা বারবার বাদ দিন।
৯. কোয়ালিটি ঠিক রাখুন
কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে এক ধরনের সাধনা। এটিকে ভালোবাসতে হবে যদি সফল হতে চান। আপনি যদি ভাবেন যা লিখবো তাই সই তাহলে খাবেন ধরা। কেননা একজন চাওয়ালা যদি তার দোকানের চায়ের কোয়ালিটি যদি প্রতিদিন একরকম দেয় আর হঠাৎ একদিন খারাপ করলে আপনি কিন্তু ধরতে পারবেন। তাই আপনার আর্টিকেলটিও সেরকম। ভাববেন আরে ক্লায়েন্ট আমার ফ্যান ধরবে না। তাহলে ভুল পথে আছেন। কারণ ক্লায়েন্ট টাকা দিয়ে কিনবে তাই সে কিন্তু ষোলআনা বুঝে নিবে।
১০. নিজেকে ইম্প্রুভ করুন
সব ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু নিজেকে পারফেক্ট কখনোই ভাববেন না। নিজের কোন জায়গায় ভুল হচ্ছে, কোন জায়গায় ইম্প্রুভ করা দরকার সেটা নিয়ে সিনিয়রদের সাথে আলোচনা করুন পরামর্শ নিন। কেননা নিজেকে পারফেক্ট ভাবলে আপনি শেষ।
যাইহোক, অনেক কথাই লিখলাম। আরো অনেক ভুল ভ্রান্তি থাকে। কিন্তু আজ এই ১০টি সমস্যা নিয়েই লিখলাম। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে এগুলো শেয়ার করলাম তারপরেও যদি কারো কিছু জানার থাকে কমেন্ট করে জানাবেন ইনশাআল্লাহ জানাবো। ধন্যবাদ।